ভোলা মঙ্গলবার
১৮ নভেম্বর ২০২৫
১৬ নভেম্বর ২০২৫

ভোলায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার শিশুরা পাবে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা


নিজস্ব প্রতিবেদক
73

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২৫ | ০৮:১০:০১ পিএম
ভোলায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার শিশুরা পাবে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা



ভোলাদর্পণ প্রতিবেদক : ভোলায় আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫। মাসব্যাপী এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি শিশু-কিশোরকে এই টিকা দেওয়া হবে।

 

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ভোলা সিভিল সার্জন অফিসের হলরুমে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনিরুল ইসলাম মনির।

 

 

তিনি জানান, পুরো জেলায় স্কুলে প্লে-নবম শ্রেণি পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন চলবে চলতি মাসের ১২ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত। আর কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইপিআই টিকা সেন্টারে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত টাইফয়েডের টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে। ভোলায় এই ক্যাম্পেইনের আওতায় প্রায় ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৮ জন শিশু-কিশোর প্রতিজনকে অত্যন্ত কার্যকর এক ডোজ টাইফয়েডের টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। এর মধ্যে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৮ জন স্কুলগামী এবং বাকী ২ লাখ ৫০ হাজার ৯২০ জন স্কুল বর্হিভুত শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই টিকা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।

 

সিভিল সার্জন জানান, যাদের জন্মনিবন্ধন নেই কিংবা স্কুলে পড়ে না, তাদেরও ম্যানুয়ালি নিবন্ধন করা হবে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।

 

বাংলাদেশ টিকা দিয়ে প্রতিরোধযোগ্য মারাত্মক সংক্রমণ রোগগুলোর মাঝে টাইফয়েডের জ্বর অন্যতম। সালমোনেলা টাইফি নামে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ হয়ে থাকে। দূষিত পানি খাবারের মাধ্যমে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে টাইফয়েড হয়ে থাকে।

 

 

এই টিকা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে টাইফয়েড মুক্ত করা, টাইফয়েড রোগের বোঝা কমানো এবং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কমানো, সব মিলিয়ে মানুষের উৎপাদন সক্ষমতা সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এ টিকা মাইল ফলক হবে।

 

এই টিকা সম্পর্কে গুজব ধারণা সম্পর্কে বলেন, সারা বিশ্বব্যাপী এই টিকা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছাড়াই শিশুরা গ্রহণ করছে। পাকিস্তান, নেপাল ও বিভিন্ন দেশে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিসিভি টিকা দেওয়ার পর সামান্য প্রতিক্রিয়া, যেমন- টিকা দেওয়ার স্থানে চামড়া লাল হওয়া, ফুলে যাওয়া, সামান্য ব্যথা, অল্প জ্বর, মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ভাব, এবং মাংসপেশিতে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে; যেগুলি এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে এই টিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এই টিকা নিরাপদ। এছাড়া ক্যাম্পেইন থেকে শুরু করে ভ্যাকসিনেশনে সব সহায়তা গ্যাভি (বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র শিশুদের জন্য টিকা কিনতে সহায়তাকারী সংস্থা) করছে। সরকারের এতে কোনো খরচ নেই। নির্ধারিত বয়সের সবাইকে দেয়ার জন্য টিকা মজুদ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে যে শিশুমৃত্যু হয়, তার দুই তৃতীয়াংশের কারণই হলো টাইফয়েড। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই টিকা দিলে ৩ থেকে ৭ বছর প্রটেক্টেড (ঝুঁকিমুক্ত) থাকা যায়। বাংলাদেশে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুরা বেশি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ২০২১ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের প্রায় ৮ হাজার মানুষ টাইফয়েড জ্বরে মৃত্যুবরণ করে, যার মধ্যে ৬৮ শতাংশ ১৫ বছরের কম বয়সি শিশু।


আরও পড়ুন: